নিম গাছের কোন অংশ যকৃতের জন্য উপকারী জেনে নিন
নিম গাছ এর উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি। নিম গাছ স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী এবং বিজ্ঞানীরা নিম গাছকে এক মহৌষধ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। আজকের এই আর্টিকেলের মূল আলোচ্য বিষয় হলো নিম গাছের কোন অংশ যকৃতের জন্য উপকারী এবং নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা।
নিম গাছের প্রতিটি অংশের উপকারী যেমন গাছপাতা ফল এবং ফুল থেকে শুরু করে প্রতিটি অংশ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয় এজন্য বিজ্ঞানীরা বলেন নিম গাছ এক মহা ঔষধ যার যেকোনো রোগ বালাইকে দূর করতে সাহায্য করে। নিম গাছ এবং নিম পাতা ব্যবহার করে শরীরের যাবতীয় রোগবালাইকে দূর করতে পারবেন আসুন আমরা জেনে নেই নিম গাছের কোন অংশযৌকিকতের জন্য উপকারী।
নিম গাছের কোন অংশ যকৃতের জন্য উপকারী
নিম গাছের বিভিন্ন অংশ থেকে ঔষধি গুনাগুন পাওয়া যায় প্রাচীনকাল থেকে নিম গাছের পাতা, ঝাল গাছ এবং ফল ইত্যাদি ব্যবহার করে আসা হচ্ছে রোগ বালাই দূর করার জন্য। নিম গাছের বিভিন্ন অংশের আলাদা আলাদা উপকারিতা রয়েছে যেমন ব্যাকটেরিয়াজনিত সমস্যা দূর করতে নিম গাছের পাতা ব্যবহার করা হয় পোকামাকড়ের জ্বালাপোড়া ও প্রদাহ দূর করতে নিম গাছের ছাল ব্যবহার করা হয় নিম গাছের পাতা থেকে প্রচুর এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান পাওয়া যায়। যা ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসজনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।নিম গাছের পাতা এবং নিম গাছের ছাল যকৃতের জন্য খুবই উপকারী এটি যকৃতের কার্যক্ষমতা থেকে বৃদ্ধি করে যকৃতের প্রদাহ কমায় এবং এটি শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে। নিম গাছের পাতা এবং ছাল যকৃতের জন্য উপকারী। নিম গাছের পাতা এবং ছাল থেকে বিভিন্ন কার্যকরী উপাদান পাওয়া যায় যে যকৃতের জন্য উপকারী হতে পারে। নিচে উপকারিতা ব্যাখ্যা করা রয়েছে।
১) নিম গাছের পাতার রস নিয়মিত পান করলে হোপাটাইটিস বি এবং সি থেকে সুরক্ষা পাওয়া যাবে। নিম গাছের পাতা থেকে আন্টি ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান পাওয়া যায়। যা হোপাটাইটিস ভাইরাসের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে কাজ করে এবং হেপাটাইটিস বি ও সি থেকে সুরক্ষা প্রদান করে।
২) নিম গাছের পাতা ফ্যাটি লিভার এর সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার গ্রহণ করার ফলে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা তৈরি হয়। নিম গাছের পাতা থেকে এমন উপাদান পাওয়া যায় যা ফ্যাটি লিভারের সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
৩) নিয়মিত সকালে নিম গাছের ছাল এর রস পান করলে এটি যকৃতের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করবে। নিম গাছের ছাল থেকে এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান পাওয়া যায় আর এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর কাজ হল যে কোন প্রদাহ দূর করা। হাত-পায়ে জ্বালাপোড়া কিংবা ক্ষত সৃষ্টি হলে সেখানে জ্বালাপোড়া দূর করতে নিয়মিত নিম গাছের ছালের রস পান করতে হবে।
৪) নিম গাছের ছাল যকৃতের জন্য খুবই উপকারী। নিম গাছের ছাল চিবিয়ে খেলে রক্ত শোধিত হবে। শরীরে বদ রক্তের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেলে বিভিন্ন রোগ বালাই তৈরি হয়, তাই শরীর থেকে রক্ত পরিশোধিত করতে নিয়মিত নিম কাছে ছালচি দিয়ে খেতে হবে। অথবা নিম গাছের ছাল এর রস পান করতে পারেন। প্রবাহ আমাদের সাহায্য করবে।
৫) নিম গাছের পাতা যকৃত থেকে বাইরের শিক্রিশন কে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যকৃতের কাজ হল পাচনতন্ত্রের সাহায্য করা এবং যে কোন খাবারকে দ্রুত পরিপাক করা। যক্রি থেকে এক ধরনের পাচন রস পাওয়া যায় এটি যে কোন খাবারকে দ্রুত পরিপাক করতে সাহায্য করে এতে পেট ফেঁপে থাকে না গ্যাসের সমস্যা হয় না। নিম পাতা এর রস পান করলে যকৃতের কার্যকারিতা আরো বাড়বে এবং গ্যাসের সমস্যা দূর হবে।
৬) নিম পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে গ্লাইকোসাইডস। এই উপাদানটি যকৃতের কার্যক্ষমতা কে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়। এছাড়াও নিম পাতা থেকে প্রচুর পরিমাণে ফ্ল্যাভানয়েডস নামক এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় এটি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং যকৃতের কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
৭) নিম পাতার রস যকৃতের জন্য খুবই উপকারী। যকৃতের রস থেকে প্রচুর পরিমাণে লীনা লুল নামক এক ধরনের অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়া উপাদান পাওয়া যায় এটি যকৃতের যেকোনো ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে এবং যকৃতের স্বাস্থ্য কে আরো উন্নত করে।
৮) নিম পাতার রস থেকে প্রচুর পরিমাণে বেটা-সিটোস্টেরল উপাদান পাওয়া যায় যার যকৃতের কার্যকারিতাকে আরো বৃদ্ধি করে এবং দ্রুতগতির করে। নিম পাতা থেকে প্রচুর পরিমাণে ঔষধি গুনাগুন সম্পন্ন উপাদান পাওয়া যায়। এই উপাদানগুলো যকৃতের জন্য উপকারী ভূমিকা পালন করে।
৯) নিমের পাতা থেকে এলকালয়েডস নামক এক ধরনের উন্নত উপাদান পাওয়া যায়। এই উপাদানটি যকৃতের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে এবং পাঁচন রসকে আরও বৃদ্ধি করে। নিমের পাতা যকৃতের জন্য খুবই উপকারী নিয়মিত সকালে এক গ্লাস রিমের পাতার রস পান করলে যকৃতের কার্যকারিতা বাড়বে, পাঁচ এর পরিমাণ বাড়বে এবং গ্যাসের সমস্যা কমবে ও হজম শক্তি আরো উন্নত হবে।
১০) নিম পাতার রস থেকে টেরিনোস নামক এক ধরনের উপাদান পাওয়া যায় এটি কোষের ক্ষতি রোধ করে এবং যকৃতের স্বাস্থ্যকে আরো উন্নত করতে সাহায্য করে। যকৃতের যেকোনো একটি কোষ যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তাই সমস্যা এড়িয়ে চলতে নিয়মিত সকালে এক গ্লাস নিমপাতার রস পান করতে হবে।
নিম পাতার রস যকৃতের জন্য খুবই উপকারী আশা করছি আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন নিয়মিত সকালে নিম পাতার রস পান করলে কি কি উপকার পাওয়া যায়। নিম পাতার রস বিশেষ করে যকৃতের জন্য খুবই উপকারী এটি পাঁচন রোশকে বৃদ্ধি করে। এবং পাচন ক্রিয়া আরো দ্রুততর করে। এবার চলুন আমরা দেখে আসি নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
নিম পাতার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। বিজ্ঞানীরা বলেন নিম পাতা থেকে এমন আশ্চর্যজনক উপাদান পাওয়া যায় যা স্বাস্থ্যের বিভিন্ন রোগ বালাইকে দূর করতে সাহায্য করে। নিমপাতা এর সাহায্যে বিভিন্ন ঔষধ তৈরি করা হয়। প্রাচীনকাল থেকে এই নিম গাছকে ব্যবহার করে আসা হচ্ছে নিম গাছের ছাল ও পাতার বেটে ছোট ছোট লাড়ু তৈরি করে খেয়ে নিলে শরীর থেকে যাবতীয় রোগ বালাই দূর হয়ে যায়।
নিম গাছের পাতা ছাল ডাল রস সবকিছুই কাজে লাগে। এমনকি বাসায় নিমগাছ থাকলে রোগ বালাই কম হবে এবং বাসা থেকে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস কমবে। এইজন্য প্রত্যেকের বাসায় এটি নিম গাছ লাগানো খুবই জরুরী নিম গাছের বাতাস স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এটি বিভিন্ন রোগ বালাইকে দূর করতে সাহায্য করে।
নিম পাতা দিয়ে পানি সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে শরীর থেকে যাবতীয় খসড়া পচাড়া চুলকানি চর্মরোগ দূর হয়। নিম গাছের পাতা পেটে ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বক থেকে ব্রণের সমস্যা দূর হয় এবং এটি ত্বকের জাদুর মত কাজ করে ও ত্বকের রংকে পরিবর্তন করতে সাহায্য করে।
নিম পাতা কৃমিনাশক ঔষধ হিসেবে কাজ করে নিম পাতার রূপচর্চের ব্যবহার করা যায় এছাড়া নিম গাছের ডাল দাঁতের জন্য খুবই উপকারী এটির দাঁতকে আরও মজবুত করে ওর দাঁতের মাড়ি ব্যথা ও দাঁত থেকে রক্ত পড়া প্রতিরোধ করে। নিম পাতার আরো সকল উপকারিতা সম্পর্কে জানতে নিচে দেখে নিন।
- নিম গাছের পাতা এবং ছাল বেটে খেলে ত্বক থেকে ব্রণের দাগ ও অন্যান্য সমস্যা দূর হবে। ত্বক হবে দাগ হীন উজ্জ্বল এবং ফর্সা।
- নিম গাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে অ্যালার্জি প্রতিরোধক উপাদান পাওয়া যায়। যারা অতিরিক্ত এলার্জির সমস্যা আমার সাথে ভুগছেন নিয়মিত নিম পাতার রস পান করুন এতে ভেতর থেকে এলার্জি মরে যাবে।
- নিম পাতার রস মূত্রনালীর সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। নিয়মিত সকালে এক গ্লাস নিম পাতার রস পান করলে মূত্রনালী এবং কিডনি ভালো থাকবে।
- গর্ভকালীন সময়ে চর্ম রোগের সমস্যা প্রতিরোধ করতে নিম পাতা ব্যবহার করতে পারেন।
- শরীরে চুলকানি কিংবা জ্বালাপড়ার সমস্যা থাকলে নিমপাতা বেটে ব্যবহার করতে হবে এতে যেকোনো চুলকানি এবং চর্মরোগ দূর হবে।
- নিম পাতার রস পান করলে হালকা জ্বর দূর হয়।
- যেকোনো পোকামাকড়ের আক্রমণ ঘটলে নিম পাতার রস ব্যবহার করতে হবে এতে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন প্রতিরোধ হবে এবং দ্রুত জ্বালাপোড়া ও প্রদাহ কমে যাবে।
- নিম পাতার রস পান করলে মাইগ্রেনের সমস্যা প্রতিরোধ হয়।
- নিম পাতার রস রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
- নিম পাতা শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে এবং রক্ত পরিশোধিত করে।
- নিম পাতার ছাল গুঁড়ো করে খেলে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা দূর হবে এবং যকৃত সুস্থ থাকবে।
- নিম পাতার রস যকৃতের জন্য উপকারী এটি পাচন রসকে বৃদ্ধি করে।
- নিম গাছের ডাল দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত ঝকঝকে পরিষ্কার হবে এবং দাঁত ব্যথা দাঁতের মাড়ি ব্যথা দূর হবে।
- নিম গাছের পাতা ব্রোন্কাইটিস এবং শ্বাসকষ্ট এর সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে।
- নিম পাতার রস পান করলে ক্যান্সার প্রতিরোধ হয়। নিম পাতা থেকে এন্টি কারসিনো জেনিক নামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় এটি ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
- নিম গাছের ডাল দাঁতের জন্য উপকারী এটির দাঁত থেকে রক্ত পড়া দূর করতে সাহায্য করে।
- নিম গাছের পাতা বেটে ত্বকে ব্যবহার করলে ব্রণের সমস্যা দূর হবে।
- নিমপাতা বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে। ত্বকে অতিরিক্ত বয়সের ছাপ থাকলে নিম পাতা বেটে ত্বকে ব্যবহার করতে হবে এতে বয়সের ছাপসহ ব্রণের দাগ দূর হবে।
- নিম গাছের পাতা মাথা ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে অতিরিক্ত মাথা ব্যথা হলে নিম পাতার রস খেয়ে নিতে হবে।
- নিম গাছের পাতার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে বৃদ্ধি করে।
নিম পাতার রস ডাল এবং ঝাল স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী এক কথায় নিম গাছের প্রতিটি অংশই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। নিয়মিত নিম গাছের ছাল এর গুঁড়ো পান করলে রক্তের সুগারের লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকবে। নিয়মিত এক গ্লাস নিম পাতার রস পানকো লেবুর সাথে কখনো ডায়াবেটিসের সমস্যা তৈরি হবে না চুল পড়ার সমস্যা কমবে এবং এটি ত্বককে সুন্দর রাখতে সাহায্য করবে। আশা করছি আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন নিম গাছের উপকারিতা সম্পর্কে। এবার চলুন দেখে আয় সেই নিম গাছের পাতা খাওয়ার নিয়ম??
নিম গাছের পাতা খাওয়ার নিয়ম
নিম গাছের পাতা খাওয়ার একাধিক নিয়ম রয়েছে। নিম কাছে প্রতিটি উপাদানের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী যেমন নিম গাছের ছাল পাতা এবং ডাল প্রতিটি উপাদান বিভিন্ন রোগবালাই দূর করতে সাহায্য করে। নিম গাছের পাতার রস খেলে গ্যাসের সমস্যা দূর হবে চুল পড়ার সমস্যা দূর হবে ত্বক সুন্দর হবে চর্ম রোগের সমস্যা দূর হবে এবং চুলকানি ও জ্বালাপোড়া দূর হবে।
বিজ্ঞানীরা বলেন নিয়মিত সকালে এক গ্লাস নিম গাছের পাতার রস পান করলে ক্যান্সার পর্যন্ত প্রতিরোধ হয়। এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে নিম গাছের পাতা কিভাবে খেতে হবে? নিম গাছের পাতা বেটে তার রস একটি পাত্র সংরক্ষণ করে এসে রসের মধ্যে দুই চা চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন নিম গাছের পাতার রস এর স্বাদ তেঁত। এর মধ্যে এক চা চামচ কিংবা দুই চা চামচ মধু মিশালে স্বাদ বৃদ্ধি পাবে।
নিম গাছের পাতা খাওয়ার আরো একটি দুর্দান্ত নিয়ম হলো নিম গাছের পাতা পরিষ্কার করে পাটায় বেটে ছোট ছোট সাইজ এর লারু অথবা বড়ি তৈরি করে খেতে পারবেন। যদি পেটের সমস্যা থাকে হজমশক্তির সমস্যা থাকে তাহলে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে একটি নিম পাতার বড়ি খেয়ে নিতে হবে।
হাত কিংবা পায়ে চর্ম রোগের সমস্যা থাকলে নিম পাতা বেটে আক্রান্ত স্থান ব্যবহার করতে হবে এতে ব্যাকটেরিয়াল কিংবা ভাইরাল ইনফেকশন দূর হবে ও চর্ম রোগের সমস্যা প্রতিরোধ হবে। নিম পাতার ডাল দাঁতের জন্য উপকারী। নিম পাতার ডাল সরাসরি চিবিয়ে রস খেলে এতে দাঁতের মাড়ির উপকার পাওয়া যাবে তাদের মাড়ির সংক্রমণ প্রতিরোধ হবে এবং দাঁত আরও মজবুত হবে।
নিম পাতার পানি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী শরীরে চুলকানির সমস্যা থাকলে কয়েকটি নিমপাতা পানির মধ্যে হালকা ফুটিয়ে সে পানি ঠান্ডা করে শরীরে ব্যবহার করতে হবে। তাহলে চুলকানির সমস্যা দূর হবে। অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যা কিংবা চুলে খুশকির সমস্যা থাকলে নিম পাতার পানি চুলে ব্যবহার করতে হবে।
একটি বড় পাত্রের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি নিয়ে তার মধ্যে ১০ থেকে ১২টি নিমপাতা ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে। পানির রং হালকা হলুদ কিংবা সবুজ হয়ে আসলে সেই পানিটি ঠান্ডা না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। পানি ঠান্ডা হয়ে গেলে এই অবস্থাতে ধীরে ধীরে মাথায় সেই পানি ঢালতে হবে। এতে কয়েক দিনের মধ্যেই চুল পড়া এবং খুশকির সমস্যা দূর হবে।
নিম পাতার বড়ির মধ্যে কিংবা নিম পাতার রসের মধ্যে কোন প্রকার চিনি ব্যবহার করা যাবে না। প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি মধু ব্যবহার করতে পারেন। তবে চিনি ব্যবহার করলে এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠবে। আশা করছি আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন নিম পাতা খাওয়ার উপায় সম্পর্কে। এবার চলুন দেখে আসি নিম পাতা কিভাবে ব্যবহার করলে চুল পড়া কমবে?
নিম পাতা কিভাবে ব্যবহার করলে চুল পড়া কমবে
বর্তমান সময়ে প্রত্যেকের একটি সমস্যা হল চুল পড়া। অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যায় জীবন যেন অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। বাসায় সব জায়গায় শুধু চুল। এই চুল পড়ার সমস্যা থেকে কিভাবে রেহাই পাওয়া যায়? যদি চুল পড়ে সমস্যা থেকে রেহাই পেতে চান তাহলে নিয়মিত নিম পাতা ব্যবহার করা শুরু করুন,
নিম পাতাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং আন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান সহ আন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান যা চুলের গোড়াকে মজবুত করবে অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যাকে রোধ করবে, চুলে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন প্রতিরোধ করবে এবং চুলের আগা ফাটায় সমস্যা কি দূর করতে সাহায্য করবে।
চুল সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা দূর করতে নিমপাতা ব্যবহার করতে হবে নিম পাতার স্বাস্থ্যের জন্য ত্বকের জন্য এবং চুলের জন্য খুবই উপকারী। এখন প্রশ্ন হলো কিভাবে নিম পাতা ব্যবহার করতে হবে? প্রতিদিন গোসল করার পূর্বে কয়েকটি টাটকা নিমপাতা পানির মধ্যে হালকা ফুটিয়ে নিতে হবে যখন পানির রং হালকা হলুদ কিংবা সবুজ হয়ে আসবে তখন সেই পানিটি ঠান্ডা করতে হবে। কখনোই গরম পানি মাথায় ব্যবহার করা যাবে না এতে চুল পড়ার সমস্যা আরো অনেক গুন বেড়ে যাবে।
শীতকালে বেশিরভাগ চুল পড়া সমস্যা বেড়ে যায় কারণ অনেকেই শীতকালে গরম পানি মাথায় ব্যবহার করেন এতে চুলের গোড়া নরম হয়ে পড়ে এবং খুব সহজেই চুলটি ঝরে পড়ে। ঠান্ডা পানি ব্যবহার করতে হবে এবং চুলের স্ক্যাল্পে বেশি বেশি ম্যাসাজ করতে হবে এতে স্ক্যাল্পের রক্তের সঞ্চালন গতি বাড়বে ও চুল পড়ার সমস্যা দূর হবে।
নিম পাতার পানি ঠান্ডা করে চুলে ব্যবহার করতে হবে। সে পানি দিয়ে নিয়মিত গোসল করবেন এতে চর্মরোগ থেকে শুরু করে যে কোন সমস্যা দূর হবে এবং ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন ও ফাঙ্গাস ইনফেকশন দূর হবে। নিয়মিত গোসল করার পূর্বে নিম পাতার রস চুলে ব্যবহার করলে সাত থেকে আট দিনের মধ্যেই চুল পড়া সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং চুলের আগা ফাটার সমস্যা রোধ হবে।
নিম পাতার অপকারিতা
নিম পাতা ব্যবহার করার ফলে কি কোন ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়? বিজ্ঞানীরা শুধুমাত্র নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে বলেছেন তবে নিম পাতা ব্যবহার করার ফলে কি কোন ক্ষতি হতে পারে? হ্যাঁ। নিম পাতার অতিরিক্ত ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ হতে পারে অনেকেই উপকার পাওয়ার আশায় অতিরিক্ত পরিমাণে নিম পাতা ব্যবহার করা শুরু করেন।
যার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর যেমন অতিরিক্ত নিমপাতা ব্যবহার করার ফলে এলার্জির সমস্যা তৈরি হতে পারে তবে অতিরিক্ত চুলকানি জ্বালাপোড়া তৈরি হবে। রক্তচাপ কমে যাবে, হর্মোনাল সমস্যা তৈরি হবে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হবে ত্বকে অতিরিক্ত ব্রণ তৈরি হবে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা নষ্ট হবে এবং কথা অবস্থায় অতিরিক্ত নিম পাতা ব্যবহার করার ফলে গর্ভের বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে। অতিরিক্ত নিম পাতা ব্যবহার করার আরো সম্ভাব্য ক্ষতি সম্পর্কে নিচে দেখে নিন।
- অতিরিক্ত নিমপাতা ব্যবহার করার ফলে শরীরে শক্তির অভাব তৈরি হবে। শরীর অনেক বেশি দুর্বল হয়ে পড়বে।
- অতিরিক্ত নিমপাতা এর রস পান করলে খাবারে অরুচি তৈরি হবে।
- থাইরয়েড সমস্যা তৈরি হবে।
- ঘুমের অভাব দেখা দিবে।
- অতিরিক্ত এলার্জির সমস্যা তৈরি হবে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা তৈরি হবে অথবা মলত্যাগের সমস্যার সৃষ্টি হবে।
- বমি বমি ভাব তৈরি হবে।
- পেশিতে অথবা হারে তীব্র ব্যথা অনুভূত হবে।
- অথরাইটিস এর সমস্যা তৈরি হবে।
- মূত্রনালীর সমস্যা তৈরি হবে যেমন মূত্র নালীর ইনফেকশন।
- পেটে ব্যথা পেটে তীব্র প্রদাহ ও জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হবে।
- গ্যাসের সমস্যা তৈরি হবে।
- হৃদরোগের সমস্যা তৈরি হবে।
- ডায়াবেটিসের সমস্যা তৈরি হবে।
অতিরিক্ত নিম পাতার রস কিংবা নিম পাতার ছাল ও ডাল ব্যবহার করার ফলে উপরের এই সম্ভাব্য ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে নিম পাতার রস স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী তবে অতিরিক্ত নিম পাতা ব্যবহার করার ফলে এই ক্ষতিগুলো হতে পারে তাই অতিরিক্ত নিম পাতার রস সেবন করা থেকে বিরত থাকুন। আশা করছি আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন নিমপাতার অপকারিতা সম্পর্কে। নিম পাতার সেবন করার ফলে কি কি ক্ষতি হতে পারে।
লেখক এর শেষ কথা
প্রিয় পাঠক বিন্দু আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করলাম নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা, নিম পাতা খাওয়ার উপায় নিম গাছের কোন অংশ যকৃতের জন্য উপকারী এবং নিম গাছের কোন অংশগুলোর কি কি উপকারিতা রয়েছে সে সকল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। নিম গাছের পাতার ডাল ফল এবং ফুল সবকিছুই মানব স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী এজন্য বিজ্ঞানীরা নিম গাছকে এক ঔষধি গুনাগুন সম্পূর্ণ গাছ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
কারণ নিম গাছের ডাল তাদের জন্য উপকারী এটি তাদের মাড়ির সংক্রম প্রতিরোধ করে নিম গাছের পাতা এটি চর্মরোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে আবার হার্ট ও কিডনির জন্য উপকারী। নিম গাছের ছাল চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে পাশাপাশি ব্রণের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এককথায় নিম গাছ এর গোড়া থেকে শুরু করে পাতা ফল ও ফুল পর্যন্ত প্রতিটি উপাদানের মানব স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
এমনকি যে বাসাতে নিম গাছ রয়েছে সেই বাচ্চাদের রোগ বালাই কম হয়নিম গাছের বাতাস স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এটি রোগবালায় কে কম করে। আশা করছি আজকের এই আর্টিকেটির মাধ্যমে আপনারা প্রত্যেকে বুঝতে পেরেছেন নিম গাছের উপকারিতা ও অপকারিতা কি কি। আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার নিকট কেমন লেগেছে কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই জানাবেন।
বাংলা আইটিটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url