মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব কি এবং মিয়োসিস কাকে বলে

মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব অধিক। এই পৃথিবীতে মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া না ঘটলে সাধারণ কার্যক্রম ব্যাহত হয়। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব কি এবং মিয়োসিস কাকে বলে, মিয়োসিস কোষ বিভাজন কোথায় ঘটে এবং মিয়োসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে? সে বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব কি এবং মিয়োসিস কাকে বলে
আপনি যদি আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন দেখেন তাহলে মিয়োসিস কোষ বিভাজন এর গুরুত্ব কি এবং কাকে বলে মিয়োসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে? মিয়োসিস কোষ বিভাজন কোথায় সংঘটিত হয় সে সমস্ত বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য লাভ করতে পারবেন. আপনারা যারা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রয়েছেন তাদের জন্য মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া এবং তিনটি কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানা খুবই জরুরি। তাই চলুন আমরা ঝটপট দেখে আসি মিয়োসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে, মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব কি এবং মিয়োসিস কাকে বলে।
পোস্ট ভাজের প্রক্রিয়া কাকে বলে 

কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া কাকে বলে 

কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া বলতে বোঝায় একটি জৈবিক ক্রিয়া যেখানে একটি কোষ এবং দুই চারটি নতুন কোষের বিভক্ত হয়। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জীবদেহের বৃদ্ধি ঘটে বিকাশ ঘটে এবং বংশবিস্তার ঘটে। একটি কোষ থেকে নতুন দুই চারটি আরো কোষের সৃষ্টি হয় যার মাধ্যমে ভ্রূণ এবং জায়গার তৈরি হয় এবং সেখান থেকে বংশবিস্তার ঘটে। কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া তিন ধরনের হয়। 
  • অ্যামাইটোসিস 
  • মাইটোসিস এবং 
  • মিয়োসিস 
অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া শুধুমাত্র অমেরুদন্ড প্রাণীদের ক্ষেত্রে ঘটে থাকে যেমন ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া, কৃমি, কেঁচো। এছাড়া অতি ক্ষুদ্র প্রাণী যেগুলো খালি চোখে দেখা যায় না এমন প্রাণীর শরীরেও অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বংশবিস্তার ঘটে।

মাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া বলতে বোঝায় যেখানে একটি খোঁজ থেকে দুইটি নতুন কোষের সৃষ্টি হয় এবং মাতৃকোষের সমান সংখ্যক ক্রোমোজোম তৈরি হয়। এই কোষ দেহকোষের বৃদ্ধি এবং সংখ্যা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। মাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া জীবের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

সর্বশেষ কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া হলো মিয়োসিস। মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়াতে একটি কোষ থেকে চারটি নতুন কোষের সৃষ্টি হয় এবং এই কোর্সগুলো মাতৃকোষের তুলনায় অর্ধেক হয় এই জন্য এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া। মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য আহরণ করার জন্য নিচে দেখে নিন মিয়োসিস কাকে বলে। 

মিয়োসিস কাকে বলে 

একটি কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার নাম হলো মিয়োসিস গ্রিক শব্দ থেকে মিয়োসিস নামকরণ করা হয়। ১৯০৫ সালে J B FARMER এবং J E S MOORE মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার নামকরণ করেন। প্রথম 1887 সালে এক বিজ্ঞানী বোভেরি গোল ক্রিমের শরীরে এই কোষ বিভাজনের প্রত্যক্ষ করেন। মিয়োসিস একটি গ্রীক ভাষার শব্দ ইংলিশে MEIOSIS বলা হয়।

মিয়োসিস এর সংজ্ঞা : যে কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মাতৃকোষে নিউক্লিয়াসটি দুই-বার এবং ক্রোমোজোম একবার বিভাজিত হয়ে নতুন চারটি অপত্য কোষের সৃষ্টি হয় এবং অপত্য কোষের ক্রোমোজোমের সংখ্যা মাতৃকোষের সংখ্যার অর্ধেক হয় তাকে মিয়োসিস বলা হয়। 

সংক্ষেপে বললে যে কোষ ভাজন প্রক্রিয়াতে একটি কোষের সাহায্যে নতুন আরো চারটি কোষের সৃষ্টি হয় তাকে মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া বলা হয় অথবা যে কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন সৃষ্ট কষে ক্রোমোজোমের সংখ্যা মাতৃকোষে ক্রোমোজোমের সংখ্যার অর্ধেক হয় তাকে মিয়োসিস বলে। 

পরীক্ষাতে মিয়োসিস কাকে বলে প্রশ্ন করা হলে উত্তর হিসেবে দেওয়া যায়, যে কোষ বিভাজন প্রক্রিয়াতে একটি কোষের সাহায্যে নতুন আরও চারটি কোষের সৃষ্টি হয় কিংবা যে কোষ বিভাজন প্রক্রিয়াতে নতুন কোষের ক্রোমোজোমের সংখ্যার তুলনায় মাতৃকোষে ক্রোমোজোমের সংখ্যা দ্বিগুণ হয় তাকে মিয়োসিস বলে। বিজ্ঞানী  স্ট্রাসবার্গার ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে সপুষ্পক উদ্ভিদের জনন মাতৃ কোষ মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া প্রত্যক্ষ করে।

মিয়োসিস হল একটি গ্রিক শব্দ যার উপর ভিত্তি করে বানান করা Meiosis অথবা মিয়োসিস। প্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করছি আপনি বুঝতে পেরেছেন নিয়ে উচিত কাকে বলে এবার চলুন দেখে আসে মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া কাদের মধ্যে সংঘটিত হয়।

মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া কাদের মধ্যে সংঘটিত হয়

মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া জীব এবং উদ্ভিদ উভয়ের মধ্যে সংঘটিত হয়। মিয়োসিস কোষ ভাজের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জীব তার বংশ বিস্তার করে এবং উদ্ভিদ নতুন কোষ সৃষ্টি করে। মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় জনন কোষের তৈরি হয় এর জন্য মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়াকে জনন ভিত্তি বলা হয়।।

এই কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জীব তার বংশবিস্তার করে। মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বৈচিত্রতা তৈরি হয় যার মাধ্যমে প্রজাতি সমাজে খাপ খাইয়ে চলতে পারে। মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া সংঘটিত না হলে মানুষ দেখতে একই রকমের হতো যার ফলে সমাজের বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হতো এর জন্য  মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া সংঘটিত হওয়া খুবই জরুরী।

মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া কাদের মধ্যে সংঘটিত হয়? 
জীব
উদ্ভিদ
প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনি বুঝতে পেরেছেন মিয়োসিস কো-সুহাস এর প্রক্রিয়া কাদের মধ্যে সংঘটিত হয় এটি জীব এবং উদ্ভিদ উভয়ের মধ্যে সংঘটিত হয় পুরুষের শুক্রাণু তৈরি করার সময়ে মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া ঘটে এবং মেয়েদের ডিম্বাণু তৈরি করার সময় ওই মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া ঘটে। উদ্ভিদের জাইগোট এবং ডিম্বক তৈরি করার সময় এই কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া দেখা যায়। এবার চলুন আমরা দেখে আসি মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব।

মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব

 অনেকে জিজ্ঞাসা করে মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব কি? যদি মিয়োসিস কোষ বিভাজন না থাকতো তাহলে কি হতো? মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব অনেক এটি জীবনের বাংশ বিস্তারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রক্রিয়া এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জীবের জনন কোষের গ্রামের তৈরি হয় যা পরবর্তীতে মিলিত হয়ে নতুন জীবের সৃষ্টি করে । মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুরুষের শুক্রাণু এবং মহিলা ডিম্বাণু মিলিত হয়ে ভ্রূণ তৈরি হয়। ভ্রূণ জাইগোট তৈরি হয়ে নতুন জীবের সৃষ্টি হয়। এই প্রক্রিয়াটি ঘটে নারীর জনন কোষে। 
মিয়োসিস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জীব এবং উদ্ভিদ উভয়ের বংশ বিস্তার ঘটে যদি মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া না ঘটতো তাহলে জেব তার বংশ বিস্তার করতে ব্যাহত হতো এবং ক্রোমোজোমের সংখ্যা স্থির থাকতো। মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া সংঘটিত না হলে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হতো যেমন যৌন জননের ভিত্তি তৈরি হতো না। 

ক্রোমোজোমের সংখ্যা হ্রাস হতো না। এতে মাতা এবং পিতা উভয়ের ক্রোমোজোম সমান থাকতো যার ফলে জীবের মধ্যে কোন বৈচিত্র্য দেখা যেত না। জীব দেখতে একই রকমের হতো এতে সমাজে খাপ খাওয়ানো অসম্ভব হয়ে পড়তো।মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে দেখে নিন

জিনগত বৈচিত্র্য তৈরি 

মিয়োসিস কোষ বিভাজন এর মাধ্যমে ক্রোমোজোমের মধ্যে জিনগত পদার্থের আধান প্রদান ঘটে এই পদ্ধতি কে বলা হয় ক্রসিং ওভার। ক্রসিং ওভার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন ধরনের জীনগত সমন্বয় তৈরি হয় এবং জীবের মধ্যে বৈচিত্র্যতা তৈরি হয়। এই বৈচিত্র্যতা প্রজাতিকে সমাজের সাথে খাপ খাওয়াতে সাহায্য করে। মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার কারণে আমরা প্রতিটি প্রজাতি দেখতে আলাদা আলাদা অনেকের চুল বড় অনেকের চুল ছোট অনেকের গায়ের রং ফর্সা অনেকের গায়ের রং কালো। 

ক্রোমোজোমের সংখ্যা স্থির থাকা 

মিয়োসিস কোষ বিভাজনের মাধ্যমে অপত্য কোষের ক্রোমোজোমের সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোম এর সংখ্যার অর্ধেক হয় ফলে যখন দুটি গ্যামেট তৈরি হয় তখন নতুন কোষে মাতা এবং পিতা উভয়ের স্থানান্তরিত হয় এভাবেই প্রজাতির ক্রোমোজোমের সংখ্যা স্থির থাকে। এতে পিতামাতার বৈশিষ্ট্য গুলোর সন্তানের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়। যার মাধ্যমে বংশ-পরম্পরায় অক্ষুন্ন থাকে। 

যৌন জননের ভিত্তি

মিয়োসিস কোষ বিভাজনকে যৌন জননের ভিত্তি বলা হয় এটি বংশ-পরম্পরায় নতুন বংশবিস্তার করতে সাহায্য করে নতুন প্রজন্ম সৃষ্টি করে প্রজাতির অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করে এবং নতুন প্রজাতির মধ্যে তার বাবা আমার বৈশিষ্টকে স্থানান্তরিত করে। এইজন্য মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব অধিক। 

বংশ পরম্পরায় অক্ষুন্ন রাখে 

আপনি দেখতে আপনার বাবার মত হবেন নাকি আপনার মায়ের মত এটি নির্ধারণ করে মিয়োসিস কোষ বিভাজন। মিয়োসিস কোষ বিভাজন পদ্ধতিতে শুক্রাণু এবং ডিম্বাণু মিলিত হয়ে ভ্রূণ তৈরি হয় এবং সেই ভ্রূণ থেকে জাইগোট তৈরি হয়, জাইগোট থেকে একটি নতুন প্রজাতি তৈরি হয়, 

সেই প্রজাতির মধ্যে বাবা-মায়ের জিনগুলো একে একে স্থানান্তরিত হয়। একজন ব্যক্তির শরীর থেকে কোটি কোটি জিন পাওয়া যায় যা মিয়োসিস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন প্রজাতির শরীরে স্থানান্তরিত হয় এই জন্য বাবা-মায়ের সন্তান দেখতে বাবা-মায়ের মতোই হয়। 

সমাজের বংশ পরম্পরাকে টিকিয়ে রাখতে এবং সমাজের টিকে থাকার জন্য মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার গুরুত্ব যদি মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া না থাকতো তাহলে এই সমাজে টিকে থাকা মুশকিল হয়ে পড়তো। মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া না থাকলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিত এই সমাজের নিয়ম আলাদা হতো। 

এমনকি মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া না থাকলে জীব তার বংশ বিস্তার করতে পারত না নতুন প্রজাতির মধ্যে তাদের জিন থাকতো না। নতুন প্রজাতির দেখতে সম্পূর্ণ একই রকমের হতো। যার ফলে বৈচিত্র্যতা নষ্ট হতো। বৈচিত্রটা নষ্ট হলে আমরা সবাই দেখতে একই রকমের হতাম আমাদের সবার বৈশিষ্ট্য একই ধরনের হত।

এতে সমাজের পরম্পরা নষ্ট হতো এবং পৃথিবী ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যেত। প্রতিটি কোষ বাটার প্রক্রিয়ার গুরুত্ব অধিক এই পৃথিবীতে মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি আশা করছি আপনি বুঝতে পেরেছেন মিয়োসিস বিভাজন প্রক্রিয়ার গুরুত্ব কতটুকু। এবার চলুন আমরা দেখে আসি, মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার বৈশিষ্ট্য। 

মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার বৈশিষ্ট্য 

মিয়োসিস কোষ বিভাজনের প্রক্রিয়া জনন মাতৃ কোশ্চেন নিউক্লিয়াস ঘটিত হয়। আপনারা যেটা বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থী রয়েছেন আপনাদের জন্য মিয়োসিস কোষ বিভাজন সম্পর্কে জানা খুবই জরুরী কিভাবে ঘটে কিভাবে নতুন প্রজাতি তৈরি হয় সে বিষয়গুলো আজকের এই পোস্টে শেয়ার করব।

মিয়োসিস কাকে বলে? একটি কোষ থেকে চারটি অপত্য নিউক্লিয়াসের জন্ম হওয়াকে মিয়োসিস বলা হয় এবং এই চারটি অপত্য নিউক্লিয়াসের ক্রোমোজোমের সংখ্যা মাতৃ কোষের ক্রোমোজোমের নিউক্লিয়াসের সংখ্যার অর্ধেক হয়। এই কোষ বিভাজন পদ্ধতিকে বলা হয় মিওসিস।

মিয়োসিস সমস্ত ক্রোমোজোম গুলো জোড়ায় জোড়ায় মিলিত হয় এবং বাইভেলেন্ট সৃষ্টি করে। মিয়োসিস প্রক্রিয়াতে কায়াজামা সৃষ্টি এবং ক্রসিং ওভারের ফলে নন সিস্টার ক্রোমাটিয়েড গুলোর মধ্যে বিভিন্ন আদান-প্রদান ঘটে যার ফলে নতুন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তৈরি হয়। মিয়োসিস কোষ ভাজন প্রক্রিয়াতে বৈচিত্রতা দেখা যায় এর কারণ হলো ক্রসিং ওভার। 

ক্রসিং ওভার পদ্ধতিতে মাতা এবং পিতার জিনগুলো আদান-প্রদান ঘটে যার মাধ্যমে নতুন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি হয়। একটি নিউক্লিয়ার ক্রোমজোম এর সংখ্যা যদি 2n হয় তাহলে মিয়োসিসের পর অপত্য চারটি কোষের ক্রোমোজম সংখ্যা হবে n সখক। মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া কতবার বিভাজিত হয়?

মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়াতে কোষ কতবার বিভাজিত হয়? 

মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়াতে কোষ পরপর দুইবার বিভাজিত হয় এবং চারটি অপত্য কোষের সৃষ্টি করে। এই চারটি অপত্য কোষের ক্রোমোজোমের সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোমের সংখ্যার অর্ধেক হয় এই জন্য এই প্রক্রিয়াকে মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া বলা হয়।

প্রথম বিভাজনকে মিয়োসিস এক এবং দ্বিতীয় বিভাজনকে বলা হয় মিয়োসিস ২। প্রথম বিভাজনের সময় অপত্য কোষেক ক্রোমোজোমের সংখ্যা মাতৃকোষেক ক্রোমোজোমের সংখ্যার অর্ধেক হয় এবং দ্বিতীয় বিভাজনটি আপত্য কোষের ক্রোমোজোমের সংখ্যা এবং মাতৃকোষের ক্রোমোজোমের সংখ্যা সমান হয় এই পদ্ধতিটিকে মাইটোসিসের অনুরূপ বলা হয়।

মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব কি/ মিয়োসিস ০১

মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব অসীম মিয়োসিস কোষ বিভাজন না থাকলে জাইগোট তৈরি হতো না বংশ পরম্পরায় অক্ষুন্ন থাকত না এবং সমাজে খাপ খাওয়ানো সম্ভব হত না। ইতিমধ্যে আশা করছি আপনি বুঝতে পেরেছেন মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব সম্পর্কে। এবার চলুন আমরা মিয়োসিস এক এর ধাপ গুলো দেখে নেই 
  • প্রোফেজ 
  • মেটাফেজ 
  • এনাফেজ 
  • টেলোফেজ 
মিয়োসিস কোষ বিভাজনের প্রথম ধাপ প্রফেজ: প্রথম ধাপটি বেশ জটিল। মিয়োসিস প্রফেজ ধাপে ক্রোমোজোম গুলো  ঘনীভূত হয়। কোশ্চেন নিউক্লিয়াসের মধ্যে থাকা ক্রোমোজোম গুলো ঘনীভূত হয়ে ছোট ছোট এবং ঘন হয়ে ওঠে এতে ক্রোমোজোম গুলো সহজেই দেখা যায়। 

প্রথম ধাপে ক্রসিং ওভার ঘটে। মিয়োসিস কোষ বিভাজনের প্রফেজ ধাপে নিউক্লিয়াসের জেলি এবং নিউক্লিয়াস গুলো বিলুপ্ত হয়ে ওঠে। এই সময় স্পিন্ডল ফাইবার অথবা তন্তু গঠিত হয়। এবং এই ফাইবারগুলো প্রমোশন গুলোকে ভাগ করে দুই ভাগে বিভক্ত করে।প্রোফেজ দীর্ঘস্থায়ী ঘটনা পরম্পরায় প্রথম ধাপ কে নিম্নলিখিত পাঁচটি উপধাপে ভাগ করা হয়েছে। 
  • ল্যাপটপটিইন 
  • জাইগোটিন 
  • ফ্যাকাইটিং 
  • ডিপ্লটিং এবং 
  • ডায়াকাইনেসিস 
প্রিয় পাঠকবৃন্দ আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন মিয়োসিস এক এর  কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া সম্পর্কে এবার চলুন আমরা দেখে আসি মিয়োসিস ২ এর কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া। এই প্রতিটি প্রক্রিয়ায় একটি জীবের বংশ পরম্পরায় অক্ষুন্ন রাখার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব/মিয়োসিস ০২

মিয়োসিস ০২ বলতে বোঝায় মিয়োসিস 1 থেকে সৃষ্ট হ্যাপ্লয়েড মাতৃকোষ যে পদ্ধতিতে চারটি হ্যাপ্লয়েডn কোষ বা নিউক্লিয়াস গঠন করে। মিয়োসিস এক কোষ বিভাজন থেকে দুইটি নিউক্লিয়াস মিয়োসিস দুই পদ্ধতিতে ৪টি হ্যাপ্লয়েড সৃষ্টি করে। মিয়োসিস দুইকে আরো চারটি পর্যায়ে ভাগ করা সম্ভব। 
  • প্রফেজ ২
  • মেটাফেজ ২ 
  • এনাফেজ ২ এবং 
  • টেলাফেজ ২
প্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব এবং মিয়োসিস এক ও মিয়োসিস দুই সম্পর্কে মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া এক থেকে পরবর্তী সময়ে মিয়োসিস দুই সংঘটিত হয়। এবার চলুন আমরা দেখে আসি, মিয়োসিস কোর্স বিভাজন কোথায় সংঘটিত হয়।

মিয়োসিস কোষ বিভাজন কোথায় সংঘটিত হয় 

আপনি কি জানেন মিয়োসিস কোষ বিভাজন কোথায় সংঘটিত হয়? মিয়োসিস কোষ বিভাজন মাতৃ জননী সংঘটিত হয় মিয়োসিস কোষ বিভাজনকে মাতৃ জনন ভিত্তি বলা হয়। কারণ এই বিভাজন প্রক্রিয়াটি মাতৃ জননী সংঘটিত হয়ে থাকে। মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া উদ্ভিদ এবং জীব উভয়ের মধ্যেই হয় উদ্ভিদের ডিম্বক এবং পরাগধানী তে কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় আর জীবের ডিম্বাড়ু এবং শুক্রাণুতে মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া সংঘটিত হয়। 

জীব এবং উদ্ভিদের উভয়ের জন্য এই কোষ বিভাজন প্রক্রিয়াটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ যদি কোনোভাবে মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় তাহলে এই পৃথিবীর স্বাভাবিক কার্যক্রম নষ্ট হবে। মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার গুরুত্ব অসীম। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জীবের বৈচিত্র্যতা দেখা যায়। প্রতিটি মানবের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে কখনো কেউ হুবহু কারোর মতো হতে পারে না বিভিন্ন দিক থেকে ভিন্নতা দেখা যায়।

এই ভিন্নতা তৈরি করে মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়াতে ডিম্বাণু এবং শুক্রাণু উভয়ের থেকে জিন আদান প্রদান করা হয় যার মাধ্যমে একটি নতুন প্রজাতির বৈশিষ্ট্য তৈরি করা হয় উভয়ের জিন দ্বারা তৈরি একটি নতুন বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে প্রজাতি তৈরি হয় যা আমাদের প্রত্যেকের চেয়ে ভিন্ন হয়ে থাকে। যদি মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া না ঘটে তাহলে আমরা প্রত্যেকেই দেখতে একই রকমের হব।

যার ফলে সমাজের শান্তি বিনষ্ট হবে এবং সামাজিক টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়বে। প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা নিশ্চয়ই আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে বুঝতে পেরেছেন যে মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার গুরুত্ব কতটুকু। মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া না থাকলে কি হতো এবং মিয়োসিস কোষ ভাজন প্রক্রিয়া কাকে বলে? মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া কোথায় সংঘটিত হয়। 

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সাথে মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া নিয়ে সবকিছু বিস্তারিত আলোচনা করলাম যে মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব কি এবং মিয়োসিস কাকে বলে, মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া কাকে বলে, মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া কত প্রকার এবং মিয়োসিস কোষ বিভাজন কোথায় ঘটে। 

যারা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রয়েছেন তারা অবশ্যই মিয়োসিস এই নামটির সাথেই চিনা পরিচিত রয়েছেন। কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া হলো তিনটি। ১) এমাইটোসিস, ২) মাইটোসিস এবং ৩) মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া। এই তিনটি প্রক্রিয়া সমাজকে টিকিয়ে রাখার জন্য এবং পৃথিবীর স্বাভাবিক ক্রিয়া চলমান রাখার জন্য খুবই জরুরী। 

অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া শুধুমাত্র অমেরুদণ্ড প্রাণীর ক্ষেত্রে দেখা যায় যেমন ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া ছত্রাক যেই প্রাণীগুলো আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না তাদের শরীরে অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বংশবিস্তার ঘটে। আর জীব এবং উদ্ভিদের মধ্যে মিয়োসিস এবং মাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া দেখা যায়। 

মাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া তে জীবের সঠিক বৃদ্ধি ঘটে এবং স্বাভাবিক কার্যক্রম সঠিকভাবে চলমান থাকে। মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়াতে জীব এবং উদ্ভিদের বংশ পরম্পরায় জিন অক্ষুন্ন থাকে এবং বৈশিষ্ট্য স্থানান্তরিত হয়। আপনি যদি মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য আহরণ করতে চান তাহলে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহ দেখে নিন এবং যে বিষয়টি বুঝতে অসুবিধা হয়েছে কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন।।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বাংলা আইটিটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url